অধিবেশণের উদ্দেশ্যঃ
এই সেশনের শেষে আপনি –
১. মনোযোগ দিয়ে কথা শোনার ক্ষেত্রে কোন দক্ষতাগুলোর প্রয়োজন হয় তা জানতে এবং শিখতে পারবেন
২. মনোযোগ দিতে বাধাঁ আসতে পারে, সেই বিষয়গুলো বুঝতে পারবেন
মনোযোগ সহকারে অনুধাবন করে, খোলা মনে শোনা বা ‘শ্রবণ’ করা যোগাযোগের প্রধান একটি উপাদান। মনোযোগ সহকারে শোনা বলতে শুধুমাত্র কথা বা বলা হয়েছে এমন অংশ শোনা বোঝায় না। এখানে শোনা মানে –
– কান দিয়ে শোনা
– চোখ দিয়ে দেখা এবং
– মন দিয়ে বোঝা
যা মুখে বলা হচ্ছে এবং যা মুখে না বলে বিভিন্ন আচরন এবং দেহের ভঙ্গি দিয়ে বোঝানো হচ্ছে-এই বিষয়গুলো বুঝতে হবে। শুনতে হবে, যা মুখে বলছে, যা বলছে না এবং তার নিশ্চুপ সময়ের না বলা কথাও। সেবা প্রদানকারী হিসেবে আপনাকে লক্ষ্য রাখতে হবে-মুখের অভিব্যক্তি, গলার স্বরের ওঠানামা, এবং তীক্ষ্মতা, কথা বলার ধরণ-আস্তে না কি তাড়াতাড়ি, সাজ পোষাক, চেহারা ইত্যাদি। চুপ করে থাকার মাধ্যমেও সেবা গ্রহনকারী তার মনের অবস্থা বোঝাতে পারেন, সেদিকেও খেয়াল রাখবেন।
বলা হয়েছে এমন অংশ শোনার সময় সেবা প্রদানকারী হিসেবে, নিজের পছন্দ, অপছন্দ, নীতি-আদর্শ, সংস্কার ইত্যাদি আলাদা করে রাখতে হবে। নিজের ইচ্ছেমতো অংশ শুনলে হবে না। কথা বলার সময় ব্যক্তির অনুভূতির দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সেবা গ্রহনকারী এক কথা বার বার বললেও আপনাকে সেগুলো ধৈর্য্য এবং আগ্রহ সহকারে শোনা প্রয়োজন।
ভালো করে শুনলে সেবা গ্রহনকারীকে –
– নিজের অনুভূতি বুঝতে, অনুভব করতে ও প্রকাশ করতে সাহায্য করে
– নিজেকে নিজে সাহায্য করার কৌশল শেখায়
– কঠিন পরিস্থিতিতে নিজের দায়িত্ব নিতে ও সমস্যা সমাধান মূলক দৃষ্টিভঙ্গী আনতে সাহায্য করে
– নিজেকে গুটিয়ে ফেলার প্রবণতা কমাতে সাহায্য করে
কোন একজন ব্যক্তি, কোন পরিবার ভুক্ত কেউ, বন্ধু, সহকর্মী, উর্দ্ধতন বা অধীনস্থ কর্মচারী এবং বিশেষতঃ একজন সেবা প্রদানকারী যখন আরেকজন সেবা গ্রহনকারীর সঙ্গে বন্ধুত্বসুলভ কথাবার্তা বা পরামর্শ দেওয়ার জন্য বিশেষ পদ্ধতিতে সাহায্য করেন, সেই ব্যক্তির প্রয়োজন অন্যকে মনোযোগ দেয়ার ব্যাপারে সংবেদনশীল হওয়া ।
মনোযোগ দেওয়ার বিশেষ পদ্ধতি, আমরা ভালোভাবে বুঝতে পারবো কিছু প্রশ্ন ও তার উত্তর দেওয়ার মাধ্যমেঃ
ক) কিভাবে আমরা বসবো যখন অন্যের প্রতি আমরা মনোযোগ দিব?
আমরা অবশ্যই মুখোমুখি বসবো, আরামে, পর¯পরের কাছাকাছি, আমরা চাইব আমাদের মাঝখানে কোনও বড় আসবাব ব্যবধান সৃষ্টি না করে।
খ) আমাদের দেহের ভঙ্গিমা অবস্থান কিরকম হবে?
আমরা অবশ্যই সামনের দিকে ঝুঁকে বসবো পিছনের তুলনায়। হাত দুটি বুকের উপর বা পিছনের দিকে না রেখে মুক্ত রাখব বন্ধুত্ব সুলভ ভঙ্গিমায়। আমাদের দেহভঙ্গিমা যেন এই বার্তাই পৌঁছে দেয় যে আমি খোলা মন নিয়ে বন্ধুত্বসুলভ ও অবিভক্ত মনোযোগ সহকারে তোমার কথা শুনবো।
গ) তখন আমার দৃষ্টি কোন দিকে নিবন্ধ করব?
আমরা কি মাটির দিকে, ছাদের দিকে বা জানালার বাহিরে তাকিয়ে আমাদের সঙ্গীর সঙ্গে কথা বলব? উত্তর হবে না। আমরা অবশ্যই আমাদের সঙ্গীর চোখের দিকে তাকাবো, সহজভাবে, তার প্রতি কটাক্ষ বা চাপ সৃষ্টি না করে।
ঘ) আমরা কি উদ্বেগ বা উত্তেজনা পোষন করব?
একজন সাহায্যকারীর উচিত কথায় ও দেহভঙ্গিমায় শিথিল থাকা। তবেই সে সাহায্য করতে পারে, তার সঙ্গীকে সহজ ও আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠতে। শিথিলতা প্রকাশ পায় মুখভঙ্গিমায় স্বরবৈশিষ্ট্যে, শব্দ ব্যবহারে ও দেহভঙ্গিমায়।
অপরকে মনোযোগ দেয়ার পদ্ধতিটির প্রতি প্রত্যেক সেবা প্রদানকারীকে যত্নবান বা সতর্ক হতে হবে, অনুপযুক্ত অভ্যাসকে কমিয়ে বা বাদ দিয়ে, এবং ভাব বিনিময়ের সময় সঙ্গীর দ্বারা প্রেরিত সংকেত গুলি সংবেদনশীল মনের দ্বারা গ্রহণ করতে হবে।
এ বিষয়ে আপনার নিজের অবস্থান আরো ভালোভাবে বুঝে নিতে, ৭.১ ও ৭.২ -হ্যান্ডআইট দেখুন, পড়ুন এবং নিজের অবস্থান মিলিয়ে নিন।
৭.১-হ্যান্ডআইট
আমি যখন কারো কথা শুনি, তখন নীচের উক্তিগুলো কতটা আমার ক্ষেত্রে ঘটে, তা মিলিয়ে নেইঃ

