অধিবেশণের উদ্দেশ্যঃ
এই অধিবেশণ শেষে আপনি –
৩. বুঝতে পারবেন সম্ভাব্য কোন কোন জায়গায় এবং পেশাজীবীদের নিকট মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভূগছেন এমন ব্যক্তিদের রেফার করতে পারবেন।
৪. এর সাথে সাথে, উল্লেখিত তালিকা ছাড়াও অন্য আর কোন রেফার করার জায়গা বা ব্যক্তি থাকলে সে তথ্য জানতে আগ্রহী হবেন।
কেন রেফার করবেন
আপনি এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জেনেছেন যে, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার প্রধান দু’টি ধরনঃ
১. স্বল্প মাত্রার বা সাধারন মাত্রার মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং
# কি করা যেতে পারেঃ প্রথম ধরণের ক্ষেত্রে একজন কাউন্সেলর বা প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য সেবা কর্মীরাই তাদের অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান দিয়েই ব্যক্তিকে সাহায্য করতে পারবেন। তাই আপনাাকে জানতে হবে, এই পেশার মানুষগুলো নিকটস্থ কোথায় কাজ করছেন এবং তাদের সংগে যোগাযোগের উপায়। সেবা প্রদানের প্রয়োজনে এবং সাহায্যপ্রার্থীর সেবা নিশ্চিত করতে, আপনি বা আপনার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে একটি তালিকা করে রাখতে পারেন এবং সময়ের সাথে সাথে তা আপডেট করতে পারেন। এতে আপনি এবং ঐ এলাকায় বসবাসরত ভূক্তভোগীরা উপকৃত হবেন।
২. তীব্র বা জটিল মাত্রার সমস্যা।
# কি করা যেতে পারেঃ তবে দ্বিতীয় ধরনের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনা ও চিকিৎসা পদ্ধতি কিছুটা ভিন্ন এবং জটিল হওয়ায় ব্যক্তিকে অপেক্ষাকৃত অধিক প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ও অভিজ্ঞ মনোবিজ্ঞানী বা মনোচিকিৎসকের কাছে রেফার করা প্রয়োজন হয়।
ব্যক্তির মাঝে যে ধরনের আচরন বা আবেগীয় সমস্যা দেখা দিলে রেফার করতে হবে তা হলোঃ
- কোন কারণ ছাড়াই শারীরিক কোন ক্ষমতা হ্রাস যেমন চোখে কোন সমস্যা ছাড়াই কোন কিছু না দেখতে পাওয়া হাত পায়ে প্যারালাইসিস (অবশ) হয়ে যাওয়া, কথা বলা বন্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
- প্রতদিনিরে যে কাজর্কম গুলো করার কথা সগেুলো না করতে পারা/অক্ষম(শশিুর বা নজিরে যত্ন নেিত অক্ষম; নজিরে প্রয়োজনীয় চাহদিা পূরনে অক্ষম)
- বিেশ বশে/ি অস্বাভাবকি আচরণ করা/ মনরেভাব এবং আবগে প্রকাশজনতি সমস্যা এবং অনকে বিেশ শারীরকি কষ্টরে কথা বলা, যার প্রকৃত শারীরকি কারণ কম থাকে
- মরত(েআত্নহত্যা) চাওয়া, নজিরে বা অন্যরে ক্ষতি করা
- পরবিাররে সদস্যা বা প্রতবিশেী বা বন্ধুরা তাকে নেিয় চন্তিতি থাকা
- পরবিাররে সদস্যা/ প্রতবিিেশ বা সমবয়শি সহ অন্য কারো দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা/ ঝুঁকেিত থাকা
- গায়িেব কথা শুনতে পাওয়া, অদৃশ্য কছিু দখেতে পাওয়া, জনি/ ভূতরে আছররে অনুভূতি
- মাদকদ্রব্য গ্রহনরে কোন লক্ষণ পাওয়া, মাংসপশেেিত খঁিচুন/িকাপুনী
- সহংিসতার শকিার নারী বা পুরুষ
কোথায় রেফার করবেনঃ
যেখানে সাইকিয়াট্রি ডিপার্টমেন্ট বা সাইকিয়াট্রিস্ট রয়েছেন। যেমনঃ
১. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি, শাহবাগ, ঢাকা
২. জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট,শেরে বাংলা নগর, ঢাকা
৩. পাবনা মানসিক হাসপাতাল, পাবনা
৪. যে কোন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল
৫. শহরের সরকারী হাসপাতাল
৬. ঢাকা শহরের বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতাল এবং ক্লিনিক যেমন- ল্যাব এইড, স্কয়ার, ইউনাইটেড, গ্রীন লাইফ, মনন, প্রত্যয়, সাইকিয়াট্রিক কিওর অন্যান্য
যেখানে মনোবৈজ্ঞানিক বা সাইকোথেরাপী প্রদান করা। যেমনঃ
১. ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগ, কলাভবন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
২. নাসিরুল্লাহ সাইকোথেরাপী ইউনিট, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগ, ৪র্থ তলা, কলাভবন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
৩. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি, শাহবাগ, ঢাকা
৪. জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট,শেরে বাংলা নগর, ঢাকা
৫. শিশু বিকাশ কেন্দ্র, ঢাকা শিশু হাসপাতাল
৬. শিশু বিকাশ কেন্দ্র, জেলা পর্যায়ের সরকারী মেডিক্যাল কলেজ
৭. ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার, জেলা পর্যায়ের হাসপাতাল
৮. ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতাল,১৯০/১, বড় মগবাজার রেলগেট, ঢাকা।
৯. ঢাকা শহরের বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতাল এবং ক্লিনিক যেমন- ল্যাব এইড, স্কয়ার, ইউনাইটেড, এ্যাপোলো, মনন, প্রত্যয়, সিএমএইচসিবি বাংলাদেশ, মনের বন্ধু, সাইকিয়াট্রিক কিওর অন্যান্য
বিশেষায়িত সেন্টারঃ
১. মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র। যেমনঃ তেজগাঁও সরকারী মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র; ক্রিয়া, মোহাম্মাদপুর; প্রত্যয়, বারিধারা; এবং অন্যান্য আরোও সেন্টার রয়েছে
২. এইচ আই ভি টেস্টিং এবং কাউন্সেলিংঃ জাগরী, এইচআইভি টেস্টিং এবং কাউন্সেলিং সেন্টার, আইসিডিডিআরবি, মহাখালী, ঢাকা
৩. নারীর উপর সহিংসতার শিকারঃ জাতীয় ট্রমা কাউন্সেলিং সেন্টার, মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ৩৭/৩ ইস্কাটন গার্ডেন রোড, ঢাকা। জরুরী সেবা ফোন করুন ১০৯২১ নম্বরে।
৪. আত্মহত্যা প্রতিরোধঃ কান পেতে রই, ঢাকা
– রোহিঙ্গা রেসপন্সঃ বিভিন্ন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মানসিক স্বাস্থ্য পেশাজীবী
– এছাড়াও নিকটস্থ অভিজ্ঞ চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানী, কাউন্সেলর ও মনোচিকিৎসক (চংুপযরধঃৎরংঃ) এর কাছে সরাসরি রেফার করা যেতে পারে।
কিভাবে রেফার করবেনঃ
অনেক সময় এমন মনে হতে পারে, “লক্ষন দেখা যাচ্ছে, তাহলে তাকে ফোন নম্বর দিয়ে দেই বা বলে দেই যে আপনার চিকিৎসা করতে হবে, না হলে আপনি ভালো থাকবেন না এবং এইটুকুই আপাতত আমার দায়িত্ব”। একটু ভাবুন তো-
- কি লক্ষনের জন্য কার কাছে যাবেন এবং কে উপযুক্ত, তিনি যদি না জেনে থাকেন, তাহলে সেই ব্যক্তি কার কাছে যাবেন বা কেন যাবেন? গেলে কি উপকার পাবেন? আর না গেলেই বা কি ক্ষতি হতে পারে?
- এই সমাজে বসবাসকারী একজন ব্যক্তি যখন জানলো, তার বা পরিবারের কারোও মানসিক সমস্যার লক্ষন আছে, তাহলে ঐ সময়ে তার মানসিক পরিস্থিতি কি হতে পারে?
- ঐ সময়ে যদি আশেপাশে অপরিচিত জনেরা/অন্যরা থাকে, তাহলে সে সামাজিকভাবে তিরস্কার বা বয়কটের কবলে পড়বেন না তো? (যেমন- ঐ বাড়ীতে বিয়ে দেওয়া যাবে না, ওদের সাথে মেলামেশা না করা ইত্যাদি)
রেফার করার সময় পালনীয় কিছু টিপস্ঃ
১. চেষ্টা করুন, তাকে একা বা ব্যক্তিগতভাবে বলতে। অর্থাৎ কারো সামনে না বলা। এমনকি শিশুর বিষয়ে/সম্পর্কে তার অভিভাবককেও একা বলুন।
২. রেফার করা বিষয়ে কোন অনুগ্রহ করে জোরাজুরি করবেন না।
৩. তাদের মতামতের ভিত্তিতে রাজী করিয়ে রেফার করুন।
৪. আপনি যে তাদের বিষয়ে আন্তরিক, এবং তা সত্যিকারে, তা আচার ব্যবহারে প্রকাশ করুন।
৫. তারা রেফার হলো কি না বা সেবাটি নিতে গিয়েছে কি না, সেবা নিলে তাতে কেমন বোধ করছে, তাদের কোন কথা/অভিজ্ঞতা আছে কি না-এগুলো বিষয়ে তাদের খোঁজ খবর নিতে তাদের সাথে নিয়মিত ফলোআপ করুন
৬. কোন তাড়াহুড়া না করে, শান্ত গলায় আপনার পর্যবেক্ষনগুলো বলুন এবং সেয়ার করার সময় এভাবে বলতে পারেন ঃ
“…….. এই লক্ষনটি দেখে আমার মনে হচ্ছে, আপনার বা তার এ লক্ষণগুলো নিয়ে চলতে কষ্ট হচ্ছে। আবার এমন হতে পারে, আগে হয়তো এমন ছিলো না। আপনি কি কখনো ভেবেছেন, মানসিক কারনে এরকম হচ্ছে কি না? যদি হ্যা হয়, তাহলে এ ব্যাপারে একটু লক্ষ্য করা এবং সচেতন হওয়া প্রয়োজন। বর্তমানে এ বিষয়ে আমাদের দেশে পেশাজীবীরা কাজ করছেন। আপনি চাইলে, আমি তাদের যোগাযোগ নম্বর বা ঠিকানা দিতে পারবো। আমি চেষ্টা করবো আপনাদের পাশে থেকে যতটুকু পারি তথ্য সেবা দিতে। আপনি কি যাবেন এই সেবাটি নিতে?”
“যদি মনে করেন, মানসিক নয় শারীরিক কারনে হচ্ছে বলে মনে হয় তাহলে চেষ্টা করুন সেটা নিশ্চিত হতে, পাশাপাশি মানসিক বিষয়টিও লক্ষ্য করতে পারেন।”
ব্যবহৃত রিসোর্সসমূহঃ
১. “কেয়ার ফর কেয়ারগিভার”-ট্রেনিং ম্যানুয়েল, মনোসমীক্ষণী, ভারত
২. “নারীপক্ষ”-এর নিজস্ব রিসোর্স
৩. প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল, সেভ দি চিলড্রেন-সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে এবং মানসিক পেশাজীবীদের ট্রেনিং ম্যানুয়েল